ছাত্র আন্দোলনে সরকারি কঠোরতার নেপথ্যে
সরকার কোনো কোনো ক্ষেত্রে আন্দোলন দানা বাঁধার আগেই দাবি মেনে নেয়, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঢাকা শহর অচল হলেও দাবি মানতে চায় না। এই দাবি মানা কিংবা না মানার পেছনে নিয়ামক কি, তা সাধারণ মানুষ জানে না। যদি জানত, সেক্ষেত্রে তারা দাবি না মানার ঐসব ফ্যাক্টর এড়িয়ে চলতো।
উদাহরণস্বরূপ, বইমেলায় নাস্তিক্যবাদী বই চিহ্নিত হওয়ার সাথে সাথেই সরকার সেগুলো নিষিদ্ধ করে। এর মূল কারণ, নাস্তিক্যবাদী বই প্রকাশনা ও লেখার সাথে জড়িত হলো মার্কিন সিআইএ-পন্থী গোষ্ঠীটি, যারা আদর্শগতভাবে আওয়ামী লীগের বিপরীত।
যে কোন আন্দোলনকেই সরকারি গোয়েন্দা ও বিশ্লেষকেরা এনালাইসিস করে দেখে, ঐ আন্দোলনের নেপথ্যে সিআইএ বা এজাতীয় কোন গোষ্ঠী কলকাঠি নাড়ছে কিনা। যদি তারা লক্ষ্য করে যে, সিআইএপন্থী কোন ফেসবুকার আন্দোলনে উস্কানী দিচ্ছে, কিংবা টকশোতে আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছে, তারা সাথে সাথে সেটিকে সরকার পতনের আন্দোলন ধরে নিয়ে কঠোর অবস্থানে চলে যায়।
যেমন আল জাজিরা টিভিতে আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে শহীদুল আলম, দৃক গ্যালারীর প্রধান। এই শহীদুল তার মালিকানাধীন দৃক গ্যালারীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘কল্পনা চাকমা’র মিথ্যা ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। জার্মানি গিয়ে সে ডয়চে ভেলের কাছে বক্তব্য দিয়েছিল-
“বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একমাত্র কাজ ‘শোষণ করা’” (https://p.dw.com/p/18wx5)
সেনাবাহিনীর কট্টর বিরোধী, উপজাতি সন্ত্রাসীদের সমর্থক তথা সিআইএপন্থী এই শহীদুল ক্যামেরা হাতে করে গিয়েছিল জিগাতলার গণ্ডগোলের মধ্যে। ফেসবুকে সে স্ট্যাটাস দিয়েছে, সেখানে গিয়ে নাকি তার ক্যামেরা ভেঙে যায়। সে যদি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ভয়েস হওয়ার চেষ্টা করে, সেক্ষেত্রে সরকার নিশ্চয়ই তা ভালোভাবে গ্রহণ করবে না।
বিগত কোটা আন্দোলনের নেতাদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দানের ঘোষণা দিয়েছিল ‘ব্লাস্ট’ নামক সংগঠনটি, যা কিনা ড. কামালের মেয়ে সারা হোসেনের পরিচালিত। চিহ্নিত সিআইএপন্থী এই সংগঠনটির ‘বিনামূল্যে’ সেবা গ্রহণের মাধ্যমেই কিন্তু কোটা আন্দোলনের নেতারা সরকারের চোখে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। ঠিক সেভাবেই সাধারণ মানুষ হয়তো এই শহীদুলকে বাহবা দিবে আল জাজিরা টিভিতে আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেয়ার জন্য, কিন্তু তারা বুঝছে না যে এই শহীদুল গংয়েরা এসে যুক্ত হওয়ার কারণেই তাদের উপর এতোটা কঠোরতা প্রদর্শন করছে সরকার।
এরকম আরো অনেক সিআইএপন্থী-মোসাদপন্থীরা এসে আন্দোলনের ভয়েস হওয়ার চেষ্টা করে, আন্দোলনকে কব্জা করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য। আন্দোলনকারীদের উচিত সাথে সাথেই এদের সাথে যে কোন প্রকার সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করে বিবৃতি দেয়া, কারণ এরা সাথে থাকার কারণেই আন্দোলনের পথ আরো কণ্টকাকীর্ণ হয়ে যায়।
Comments
Post a Comment